এক নজরে পৌরসভার ভৌগলিক ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার তথ্য
সৈয়দপুর পৌরসভা ‘অনন্য, ভৌগলিক অবস্থানের জন্য’ দেশের জনসংখ্যা ঘনত্বের দিক থেকে এটির অবস্থান 8ম। 1973 সালের 17 জানুয়ারি পর্যন্ত শহরটির সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ পেত সিটি এলাইন্স। অন্যদিকে উত্তর বঙ্গের 08 জেলার মাঝামাঝি অবস্থান এবং বিমানবন্দর থাকার জন্য সৈয়দপুর পৌর এলাকা দেশের 329টি পৌরসভার মধ্যে অনন্য উচ্চতায় করছে অবস্থান।
বর্তমানে জনসংখ্যার হার 2 লক্ষ্যাধিক। 15টি ওয়ার্ডের বিন্যাসের মাধ্যমে সৈয়দপুর পৌরসভার আয়তন 32.42 বর্গ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যে আকাশপথ, সড়ক ও রেলপথ সৈয়দপুর পৌর এলাকাকে সমৃদ্ধ করেছে।
ইতিহাস এবং ঐতিহ্যঃ ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের মাঝে জ্বলন্ত উদাহরণ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। যা দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ। 1870 সালে রেলওয়ে কারখানা স্থাপনের পর গড়ে উঠেছে সুউচ্চ দালানকোঠা, রেলওয়ের বাসা-বাংলোগুলো নান্দনিক স্থাপত্যে নির্মিত, নির্মাণ শৈলীর জন্য রেলওয়ের বিল্ডিংগুলো লাল রঙে আবৃত। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লাল দালানের শহর হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। এখানে অবস্থিত চিনি মসজিদ। যা মুসলিম স্থাপত্যে দারুণ। বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর বিভিন্ন ক্যালেন্ডারে চিনি মসজিদের ছবি স্থান পেয়েছে। সৈয়দপুর পৌর এলাকায় অবস্থিত নটখানা। নট এক প্রকার জাতি। তাদের জন্য নির্মিত কারাগার। যা নট সেটেলমেন্ট নামে পরিচিত। এটির অবস্থান পৌর 12নং ওয়ার্ডের পুলিশ লাইন্সের অভ্যন্তরে।
বিনোদনের জন্য এখানে রয়েছে বিভিন্ন মিলনায়তন যেমনঃ ফিদা আলী ইনষ্টিটিউট, মুর্তূজা ইনষ্টিটিউট, রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব। মুসলিম স্থাপত্যের মধ্যে এই পৌর এলাকায় গড়ে উঠেছে 120টির মতো মসজিদ। মসজিদ ছাড়াও এখানে রয়েছে মন্দির, গীর্জা। তবে 4 ধর্মের লোক বসবাস করে এই পৌর এলাকায়। সব মিলিয়ে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ধর্মের লোক বসবাস করে।
বর্তমানে এ পৌর এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ কারণে সৈয়দপুর শিক্ষা নগরী হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। এখানে মোট 11টি কলেজ, 20টি মাধ্যমিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, 8টি জুনিয়র শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং প্রাথমিক শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান রয়েছে 51টি। মাদরাসা দাখিল 2টি, কওমী মাদরাসা 12টি। সৈয়দপুর এক সময় লেবার টাউন হিসেবে পরিগণিত হয়। এখানে রয়েছে শ্রম আদালত, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ক্ষুদ্র কুটির শিল্প (বিসিক) এলাকা, ছোট-বড় সরকারি ও বেসরকারি কারখানা।
ভাষাঃ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা, সৈয়দপুর ইপিজেড (উত্তরা রপ্তানিকারক অঞ্চল) প্রভৃতি কারণে কয়েকটি ভাষার মানুষ বসবাস করে। মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও এখানে উর্দূ, হিন্দি, ইংরেজি, চায়না, ভূটান, নেপাল, কোরিয়ান ভাষা প্রচলিত রয়েছে। সৈয়দপুরে খেলার মাঠের মধ্যে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম, রেলওয়ে মাঠ, ফাইভ স্টার মাঠ, সবুজ সংঘ মাঠ প্রভূতি উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া শিল্প ও সংস্কৃতির মধ্যে শিল্প সাহিত্য সংসদ (স্থাপিত 1911 খ্রিষ্টাব্দ) এছাড়া বিভিন্ন সংগীত বিদ্যালয় তথা ধ্রুপদী সংগীত বিদ্যালয়, সার্গাম সংগীত বিদ্যালয়, রঙধনু চিত্রাংকন বিদ্যালয় প্রভূতি গড়ে উঠেছে।
সৈয়দপুর পৌর এলাকায় পশ্চিমে পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নের অবস্থান, উত্তরে বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন, সদর উপজেলায় সংঘলশী ইউনিয়ন, পূর্বে কামারপুকুর ইউনিয়ন এবং সর্ব দক্ষিণে বাঙ্গালিপুর ইউনিয়ন অবস্থিত।
সৈয়দপুর পৌরসভা 1958 সালের 9 এপ্রিল গঠিত হয়। সৈয়দপুর পৌর এলাকায় পৌর বাজার প্রায় সারারাত খোলা থাকে। এখানে একটা বাক্য প্রচলন রয়েছে ‘সৈয়দপুর শহর কখনো ঘুমায় না’।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস